চেয়ার
বিষাদ
রাঙা বর্মার সেগুন কাঠের চেয়ারটিতে বসে প্রাত্যহিকী শোন
লাল
চায়ের কাপ থেকে ধোঁয়া উঠে মিশে যায়
বাতাসে।
এই
চেয়ার তোমার বাপ ঠাকুরদার আমলের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া।
এই
চেয়ারে বসে প্রথম খবর পাও বাবরি মসজিদ ধ্বংসের,
ইসরোর
চন্দ্র অভিযান, ওয়ার্ল্ড
ট্রেড সেন্টারে হামলা। এই চেয়ারে বসে
নাতিকে
ব্যাগ পিঠে স্কুলে যেতে দেখ। মাঝরাতে কাশি ওঠে...
এ
ও তোমার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কফ ফ্রি
কাশি।
তুমি
বিছানা ছেড়ে এসে ঘোর অমাবস্যায় চাঁদের পাশে জ্বলজ্বল করতে থাকা নক্ষত্রটি দেখ
তোমার
স্পষ্ট মনে পড়ে কালো ঘোমটার নীচে দুলে ওঠা নাকছাবিটির কথা।
বিবাহের
প্রথম কোজাগরী সন্ধ্যায় নিজের হাতে পরিয়ে দিয়ে ছিলে।
সে
রাতে জ্যোৎস্নায় পুড়ে ছারখার হয়েছিল ভুবন।।
ছবি
পৃথিবীর
সব থেকে দামী মানুষটি আমি
যখন
জং ধরা পেরেকে আটকে থাকি।
পৃথিবীর
সব থেকে সস্তা মানুষটি আমি
যখন
চেয়ারে ঠেস দিয়ে বসে থাকি অনন্তকাল।
আসলে আমি দামী না সস্তা তা নিয়ে আমিই ভাবি
অন্যেরা
এত অবান্তর প্রশ্ন ভাবতেই বা যাবে কেন??
২
আজকাল
আর ছবি প্রিন্ট করা হয় না
ফেসবুক, হোয়াটয়াপ, মোবাইলে মোবাইলে ঘোরে
এবং
তাকে ডিলিট বোতাম ছুঁয়ে
সহজেই
মুছে ফেলা যায়।
চিরকালই
যে কোনও জিনিস ছিঁড়ে ফেলার থেকে মুছে ফেলা অনেক সহজ।
৩
ছবিদের
একটা নিজস্ব চাল থাকে
তারা
সহজে কারোও মুখের উপর থেকে দৃষ্টি সরাই না
এমন
কী ঝড় বৃষ্টির মতো ছোটখাট বিপদজয়েও নিজেকে
অবিচল রাখে
শুধু
কোনও কারনে গৃহের ভিত নড়ে উঠলে
সে
ঝমঝম শব্দে লুটিয়ে পড়ে মাটিতে।
পারিবারিক
ছায়া
লাফিয়ে লাফিয়ে স্কুলে যাচ্ছে বালক
তার
ব্যাগ থেকে একটা লাল আপেল গড়িয়ে পড়ল
বালকটি ছায়া ভুলে এখন দৌড়াচ্ছে পৃথিবীর পিছনে
পৃথিবী
কক্ষপথ ছেড়ে ছুটে যাচ্ছে ব্লাকহোলের দিকে
২
কাঠের
আগুনে পুড়ে গনগনে হয়ে আছে খোলা
অমাবস্যার
রাতের নক্ষত্রের মতো
খই
খোলা থেকে লাফিয়ে পড়ছে মাটিতে
সধবা
ঠাকুমার পরনে মোটা পাড় শাদা শাড়ি
খই
আগুন আর শাদা শাড়ি আমাদের শান্তি সনদ
একদিন
গভীর রাতে ফিসফিস করে মাকে বুঝিয়েছিল বাবা
৩
আমরা
ধুলো পা বয়স পেরিয়ে এসেছি অনেক কাল
তবুও
এখনও মুদ্রাদোষে লিখে চলেছি বিষাদ
Khub Sundar
ReplyDelete